কমেনি ডেঙ্গুর ভয়াবহতা


* আশঙ্কা মুক্ত হতে পারেনি ঢাকাবাসী
* মফস্বলে নিয়ন্ত্রণের বাইরে

নিজশস্ব প্রতিবেদক

অক্টোবর মাসের শেষে এসেও ডেঙ্গু পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। চলতি বছরে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় লাখের কাছাকাছি। গত শুক্রবারও সারাদেশে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা ছিল আট শতাধিক। চলতি মাসে প্রতিদিন গড়ে ২ জন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু ঘটেছে। সরকারী পরিসংখ্যানে ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০৭ জন হলেও বেসরকারী হিসেবে তিন শতাধিক। রাজধানীতে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা হ্রাস পেলেও ঢাকার বাইরে বেড়েই চলেছে। গ্রামাঞ্চলে এডিস মশা নিধনের পদ্ধতির বিষয়টি ভাবতেই পারেনি সংশ্লিষ্টরা। আর রাজধানীতেও এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমও তেমন দৃশ্যমান হচ্ছে না। বৃহস্পতিবারও সারাদেশে প্রায় এক হাজার ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন থাকে। মৃত্যু ও নতুন আক্রান্তের সংখ্যা অব্যাহত থাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ নিয়ে আশঙ্কামুক্ত হতে পারছেন না ঢাকাবাসী। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ যেন প্রকৃতির ওপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে সমালোচনা করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
সশাস্বাস্থ্য অধিদফতরের ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে নতুন ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২০৩ জন। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা আগের দিনের তুলনায় ৯ দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ১৭ জন বেশি। তাদের মধ্যে ঢাকার ৪১টি হাসপাতালে ৮৮ জন ও ঢাকার বাইরে ১১৫ জন। বর্তমানে রাজধানীর ৪১টি হাসপাতালে ৪৩৭ জন ও ঢাকার বাইরে ৫১৫ জনসহ ৯৫২ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন। সরকারি হিসাবে গত ১লা জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত সারা দেশের হাসপাতালে মোট ভর্তি ডেঙ্গুর রোগীর সংখ্যা ৯৪ হাজার ৮৬৪ জন। কিন্তু বেসরকারি হিসাবে এটা কয়েকগুণ বেশি হবে। তাদের মধ্যে ঢাকায় ৪৯ হাজার ১৩২ ও ঢাকার বাইরে ৪৫ হাজার ৭৩২ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৯৩ হাজার ৬৬৪ জন। তাদের মধ্যে রাজধানীর হাসপাতাল থেকে ৪৮ হাজার ৫০৫ ও ঢাকার বাইরের হাসপাতাল থেকে ৪৫ হাজার ১৫৯ জন। কন্ট্রোল রুমের তথ্য মতে, ঢাকা শহর ব্যতীত ঢাকা বিভাগে ১৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৫ জন, খুলনা বিভাগে ৩৬ জন, রংপুর বিভাগে ১১ জন, রাজশাহী বিভাগে ১১ জন, বরিশাল বিভাগে ২২ জন, সিলেট বিভাগে ১ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৩ জন নতুন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। চলতি মাসে এ পর্যন্ত ৬ হাজার ৯১১ জন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে সেপ্টেম্বরে ১৬ হাজার ৮৫৬ জন, আগস্টে ৫২ হাজার ৬৩৬ জন, জুলাইয়ে ১৬ হাজার ২৫৩ জন, জুনে ১৮৮৪ জন, মে মাসে ১৯৩ জন, এপ্রিলে ৫৮ জন, মার্চে ১৭ জন, ফেব্রুয়ারীতে ১৮ জন এবং জানুয়ারিতে ৩৮ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।