বাংলাদেশসহ ৮ দেশের প্লাস্টিক বর্জ্য ফেরত পাঠাবে মালয়েশিয়া


মালয়েশিয়ার ক্ল্যাং বন্দরে কয়েকটি দেশ থেকে আসা কনটেইনারে ‘অবৈধ প্লাস্টিক বর্জ্য’ পাওয়ার ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করে ৪৫০ মেট্রিক টন বর্জ্য সেসব দেশে ফেরত পাঠানোর কথা বলেছে দেশটি।

মঙ্গলবার বন্দরে এসব কনটেইনার পরিদর্শন শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশিয়ার পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী ইয়ো বি ইন বলেন, পুনঃপ্রক্রিয়া করার জন্য আনা এসব বর্জ্যের কনটেইনারের সামনের অংশে অনুমোদিত বর্জ্য রাখা হলেও পেছনে ছিল অবৈধ প্লাস্টিক বর্জ্য।

মালয় মেইলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কনটেইনারগুলো এসেছে বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সৌদি আরব, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও চীন থেকে। নয়টি কনটেইনারের ভেতরে কী আছে তা গণমাধ্যমকর্মীদের দেখানো হয় মন্ত্রীর পরিদর্শনের সময়।

ওই প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে থেকে পাঠানো কনটেইনারের সামনের দিকে রিসাইকেল যোগ্য প্লাস্টিক থাকলেও ভেতরে লুকানো ছিল কমপ্যাক্ট ডিস্ক (সিডি)।

ইয়ো বি ইন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “মালয়েশিয়া উন্নত দেশগুলোর ময়লার ভাগাড় হবে না। ১০টি কনটেইনার যেখান থেকে এসেছে আমরা এগুলো সেখানেই ফেরত পাঠাব।”

এসব কনটেইনার ‘মিথ্যা’ তথ্য দিয়ে অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় পাঠানো হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন ইয়ো।

তিনি বলেন, “এটা পরিষ্কারভাবে আমাদের পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করেছে।”

পরিবেশ অধিদপ্তর, পুলিশ, শুল্ক বিভাগ এবং ক্ল্যাং বন্দর কর্তৃপক্ষকে সঙ্গে নিয়ে এসব প্লাস্টিক বর্জ্যের স্থানীয় আমদানীকারক প্রতিষ্ঠান কারা- তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

সিএনএন জানিয়েছে, অবৈধ প্লাস্টিক বর্জ্য আমদানি বেড়ে যাওয়া ঠেকাতে গত ২৪ এপ্রিল একটি যৌথ টাস্কফোর্স গঠন করে মালয়েশিয়া সরকার। ওই টাস্কফোর্স ইাতোমধ্যে ১০টি অভিযান পরিচালনা করেছে।

মালয়েশিয়ার মন্ত্রী বলেন, “যুক্তরাজ্যের মত উন্নত দেশগুলো রিসাইকেল করার বিষয়ে সবসময় সচেতন থাকে। কিন্তু তাদের কোনো ধারণাই নেই এসব নিম্নমানের রিসাইকেল অনুপযোগী প্লাস্টিক বর্জ্য কোথায় ফেলা হচ্ছে।”

যুক্তরাজ্যের একটি প্রতিষ্ঠান মালয়েশিয়াতে এরই মধ্যে এক হাজার কনটেইনারে ৫০ হাজার মেট্রিক টন প্লাস্টিক বর্জ্য পাঠিয়েছে বলে জানান তিনি।

ইয়ো বলেন, “এ ধরনের চর্চা অনৈতিক ও অসভ্যতা। আমরা উন্নত দেশগুলোকে বলছি, তারা যেন তাদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পদ্ধতি পুনর্বিবেচনা করে এবং অন্য দেশে অবৈধভাবে বর্জ্য পাঠানো বন্ধ করে।”

এর মধ্যে ক্ষতিকর প্লাস্টিক বর্জ্যের ৫টি কনটেইনার স্পেনে ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে মালয় মেইলের প্রতিবেদনে জানানো হয়।

পরিবেশ দূষণ কমাতে গত বছর প্লাস্টিক বর্জ্য আমদানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে চীন। এরপরই এসব বর্জ্য পাঠানোর নতুন গন্তব্য হয়ে ওঠে মালয়েশিয়া।

যেসব প্লাস্টিক রিসাইকেল করা যায় না তা পুড়িয়ে ফেলা হয় জানিয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, এতে বিষাক্ত কেমিকেল ছড়িয়ে পড়ে বাতাসে; মাটিতে মিশে গেলে জমি ও পানিকেও দূষিত করে তোলে।

ক্ষতিকারক বর্জ্য দেশের সীমান্তের বাইরে চলাচল এবং এদের নিয়ন্ত্রণে বাসেল চুক্তিতে প্রায় ১৮০টি দেশ সম্মতি দিয়েছে এ মাসে। জাতিসংঘের সমর্থনে দুই সপ্তাহব্যাপী বৈঠক শেষে সুইজারল্যান্ডের জেনিভায় এই চুক্তি অনুমোদন হয়।