হাসপাতালে বিয়ের অনুষ্ঠান,উচ্চশব্দে বাজছে বাংলা-হিন্দি গান,পাশের রুমে শুয়ে আছে রোগীরা


হাসপাতাল হল মানুষের রোগ নিরাময় এর নির্ভরযোগ্য যায়গা,কেউ আসে তাৎক্ষনিক চিকিৎসা নিতে কেউ বা জরুরি অবস্থায় আসেন পরবর্তিতে চিকিৎসা নিতে তাদের অবস্তান করতে হয়। কেউ কেউ থাকেন মৃত্যু সয্যায়।কিন্তু গাজীপুরের টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে দেখা গেল ভিন্ন এক চিত্র। রুমে রোগীরা শুয়ে আছে ঠিকই কিন্ত পাশেই চলছে নাচ গান।

গাজীপুরের টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে (বর্তমানে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতাল) বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় চিকিৎসারত রোগীরা এটি –’এটি হাসপাতাল নাকি কমিউনিটি সেন্টার’ তা জানতে চেয়ে পরিহাস করেছেন।

জানা যায়, শুক্রবার দুপুরে বৌভাত। তাই বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে উচ্চশব্দে বাংলা-হিন্দি গান বাজছে। মাঝে মধ্যে নাচও হচ্ছে। আর পাশের রুমেই শুয়ে আছে রোগীরা। এর তৃতীয় তলায় এই আয়োজন চোখে পড়ে।

হাসপাতালের বাবুর্চি আলী আজগরের মেয়ে সুমি আক্তারের বিয়ের আয়োজন হয়েছে ওই সরকারি হাসপাতালের ভেতরে। বিয়ের আয়োজনের অনুমতি দিয়েছেন ওই হাসপাতালের পরিচালক ডা. কমর উদ্দিন।

এলাকাবাসী ও হাসপাতালের কয়েকজন চিকিৎসক জানান, হাসপাতালের বাবুর্চি আলী আজগর হাসপাতালের ভেতরেই বসবাস করেন।

এদিকে হাসপাতালের পরিচালক কমর উদ্দিনের বিরুদ্ধে ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের কাছ থেকে হাসপাতালে মোটরসাইকেল পার্কিং করার জন্য ১৫০ টাকা করে আদায় করার অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাসপাতালে গিয়ে দেখে গেছে, হাসপাতালের নতুন ভবনের সামনে প্যান্ডেল সাজানো হয়েছে। নিচতলায় শুক্রবার দুপুরে বৌভাতের আয়োজন করা হয়েছে। তৃতীয় তলায় ডেঙ্গু রোগীদের জন্য নির্দিষ্ট ওয়ার্ডের পাশের একটি কক্ষে আয়োজন করা হয়েছে গায়ে হলুদ। সেখানে বাংলা-হিন্দি গান বাজানো হচ্ছে। গানের তালে তালে ছেলেমেয়েরা নাচও করছে।

হাসপাতালের পুরনো ভবনের দ্বিতীয় তলায় রোগীদের বেড। আর নিচতলায় একটি কক্ষে রাখা হয়েছে রান্নার দ্রব্যাদি। হাসপাতালে বিয়ের আয়োজন করায় রোগীরা যেমন বিরক্ত হচ্ছেন তেমনি স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যেও ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

ডেঙ্গু ওয়ার্ডের এক রোগীর স্বজন সালমা আক্তার বলেন, এটি হাসপাতাল নাকি কমিউনিটি সেন্টার। একটি সরকারি হাসপাতালের ভেতরে বিয়ের আয়োজন করে গান বাজনা হচ্ছে। আর রোগীরা পাশের ওয়ার্ডে কাতরাচ্ছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোগী বলেন, বিকাল থেকে হাসপাতালে গান বাজানো হচ্ছে। এখন হাসপাতাল ছেড়ে যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।

শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক কমর উদ্দিন বলেন, আলী আজগর হাসপাতালের একজন স্টাফ। তাই তার মেয়ের বিয়ের আয়োজনের অনুমতি দিয়েছি। তাতে অসুবিধা কি আছে?

সরকারি এই হাসপাতালে গতকাল শুক্রবার মহা ধুম ধাম করে সম্পন্ন হলো হাসপাতালের বাবুর্চি আলী আজগরের মেয়ে সুমি আক্তারের বিয়ে হাসপাতালে ভিতর, গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান বেজেছে ডিজে গান, অতিষ্ঠ হয়ে সারারাত ঘুমাতে পারিনি রোগীরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে হাসপাতালের নতুন ভবনের তৃতীয় তলায় আয়োজন করা হয় বিয়ের অনুষ্ঠান।